আমাদের বিজ্ঞানাগার

রসায়ন বিজ্ঞান

রসায়ন বিজ্ঞান - বিজ্ঞানাগার ভিজিট করার জন‌্য প্রবেশ করুন।

পদার্থ বিজ্ঞান

পদার্থ বিজ্ঞান - বিজ্ঞানাগার ভিজিট করার জন‌্য প্রবেশ করুন।

জীব বিজ্ঞান

জীব বিজ্ঞান - বিজ্ঞানাগার ভিজিট করার জন‌্য প্রবেশ করুন।

ল্যাবরেটরির নিরাপদ ব্যবহার

সকল আবিষ্কারের মূলেই রয়েছে গঠনমূলক বৈজ্ঞানিক চিন্তা ও উন্নতমানের গবেষণা। ল্যাবরেটরিতে মানসম্মত, ক্রটিমুক্ত ও নির্ভুল বৈজ্ঞানিক গবেষণালব্ধ ফলাফলের ভিত্তিতেই সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায়। ল্যাবরেটরিতে প্রতিটি পরীক্ষার সময় পরীক্ষাসংশ্লিষ্ট যন্ত্রের ব্যবহারবিধি সম্পর্কে পরিপূর্ণ জ্ঞান থাকা আবশ্যক। রাসায়নিক দ্রব্যের সংরক্ষণ ও ব্যবহারের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা জানা থাকা প্রয়োজন। ব্যবহৃত রাসায়নিক পদার্থের ঝুঁকি ও ঝুঁকির মাত্রা কিরূপ, উপাদান বিষাক্ত, বিস্ফোরক না দাহ্য সে বিষয়ে অবশ্যই পূর্ণাঙ্গ ধারণা থাকা প্রয়োজন। ল্যাবরেটরিতে কোনো কারণে দুর্ঘটনা ঘটলে তা প্রতিরোধ করার মতো প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা সামগ্রী রাখার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।

রাসায়নিক দ্রব্য সংরক্ষণ ও ব্যবহারে সতর্কতা

পরীক্ষাগারে রাসায়নিক দ্রব্য সংরক্ষণ ও ব্যবহার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তোমরা অনেকেই জান না যে, কোনো কোনো রাসায়নিক পদার্থগুলো স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর । কিন্তু রসায়ন গবেষণাগারে গেলে তোমরা দেখবে অনেক রাসায়নিক পদার্থের বোতলের গায়ের লেবেলে বিভিন্ন সাংকেতিক চিহ্ন দেওয়া আছে। এ সাংকেতিক চিহ্নগুলো থেকে তোমরা জানতে পারবে কোন রাসায়নিক পদার্থটি বিস্ফোরক, কোনটি বিষাক্ত ও বিপজ্জনক, কোনটি পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর, কোনটি তেজস্ক্রিয় পদার্থ ইত্যাদি।

ল্যাবরেটরি নিরাপত্তা সামগ্রী ও ব্যবহার বিধি

ল্যাবরেটরিতে কাজ করবার সময় বিভিন্ন ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। যেমনঃ কাপড়ে বা শরীরে এসিড লাগা, মুখমন্ডলে বা চোখে এসিড পড়তে পারে, আগুনে পুড়ে যাওয়া, কাচের পাত্র ভেঙে কেটে যাওয়া, পরীক্ষানলে তাপ দেওয়ার সময় জাম্প করে রাসায়নিক দ্রব্য গায়ে বা চোখে মুখে পড়া, গবেষণাগারে আগুন লেগে যাওয়া ইত্যাদি। এ জাতীয় দুর্ঘটনা ঘটলে নিম্নলিখিত ব্যবস্থা তাৎক্ষণিকভাবে নিতে হবে

(১) প্রথমত এসিড বা ক্ষার পড়লে সঙ্গে সঙ্গে সেই স্থান সাধারণ পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। চোখে মুখে পড়লে প্রচুর পানি দিয়ে ধুতে হবে।

(২) কোনো স্থান কেটে গেলে সেই অংশ পানি দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করে শুকনা তুলা বা কাপড় দিয়ে মুছে এন্টিসেপটিক জাতীয় কিছু লাগাতে হবে। প্রয়োজনে ব্যান্ড এইড লাগানো যেতে পারে।

(৩) ল্যাবরেটরিতে ব্যবহৃত গ্যাসের ধোঁয়ায় শ্বাসকষ্ট বা অস্বস্তি বোধ করলে উন্মুক্ত স্থানে আক্রান্ত ব্যক্তিকে নিয়ে আসতে হবে অথবা ফ্যানের বাতাসের ব্যবস্থা করতে হবে।

(৪) কোনো কারণে এসিড বা ক্ষার মুখের মধ্য দিয়ে পেটে গেলে প্রচুর পানি পান করাতে হবে। লেবুর রসও পান করানো যায়।

(৫) কেবল এসিড পেটে গেলে চুনের পানির সাথে মিশ্রিত করে পান করালে আক্রান্ত ব্যক্তি কিছুটা স্বস্তি বোধ করবে। উল্লিখিত কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়ে শিক্ষককে জানাতে হবে এবং এর পর পরই ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

(৬) পরীক্ষাগারে আগুন লেগে গেলে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ব্যবহার করতে হবে এবং এ যন্ত্র ল্যাবরেটরির মধ্যে দেয়ালে বা ল্যাবরেটরির বাইরের দেয়ালে রক্ষিত রাখতে হবে। এ ব্যাপারে ছাত্র-শিক্ষক, গবেষণাগার পরিচালকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা পূর্বেই করতে হবে। আগুন বেশি হলে দমকল বাহিনীকে খবর দিতে হবে।

(৭) অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র কয়েক ধরনের রাখা উচিত। যেমন

(ক) জ্বলনশীল ধাতুর মাধ্যমে আগুন লাগলে।
(খ) জ্বলনশীল তরল, তেল, পেইন্ট বা থিনার ইত্যাদিতে আগুন লাগলে।
(গ) জ্বলনশীল কাঠ, কাপড়, কাগজ, রবার, প্লাস্টিক ইত্যাদিতে আগুন লাগলে।
এছাড়া ত্বক বা দেহকে আগুন হতে বাঁচানোর জন্য ফায়ার কম্বলও ব্যবহার করা যেতে পারে।